25.7 C
Dhaka
Tuesday, July 8, 2025

যুক্তরাষ্ট্রের ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ

বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্রে আরো ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ। সরকারে এমন উদ্যোগের কথা জানিয়ে আজ সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) কাছে চিঠি লিখেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা প্রত্যাহার করে সব রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করে। অথচ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর গড়ে ৬.১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ইয়ংওয়ান চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ

উল্লেখ্য, কাঁচা তুলা ও লোহার স্ক্র্যাপের ক্ষেত্রে আমাদের শুল্ক হার যথাক্রমে শূন্য ও ১ শতাংশ।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় তুলা আমদানিকারক দেশ, যা দিয়ে তৈরি পোশাক শিল্প চালিত হয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের পণ্যগুলোর ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  হা মা সকে সমর্থন করায় আমেরিকায় ভারতীয় গবেষক গ্রে প্তার

বর্তমানে আমাদের শুল্ক তালিকায় ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্ক হার শূন্য এবং আরো ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।

এতে আরো বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) অনুযায়ী, উভয় দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পথে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা যৌথভাবে দূর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সব সময় গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী। যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিতে যদি কোনো বাধা থাকে তা দূর করতে প্রস্তুত।

এ বিষয়ে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের বাণিজ্য শাখার সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার শুল্ক হার কমানো, সব ধরনের অশুল্ক বাধা দূর করা এবং পারস্পরিক বাণিজ্যকে আরো লাভজনক করতে বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে: আমদানিনীতির হালনাগাদ, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, ট্রেডমার্ক ও পেটেন্ট সুরক্ষা ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ  মদিনায় প্রথম বাংলাদেশি হাজির মৃত্যু

চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি, মার্কিন অটো নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে সয়াবিন, গম, তুলা ইত্যাদি বড় আকারে আমদানির উদ্যোগ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সেবামূলক খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

চিঠিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, তার বিশ্বাস এসব উদ্যোগ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ভারসাম্য আনতে এবং উভয় দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে।

প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সরকারসহ বাণিজ্য উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে ইউএসটিআর দপ্তরের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক আরো মজবুত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আরও পড়ুনঃ  যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলেন উমামা ফাতেমা

এর আগে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বাড়তি ৩৭ শতাংশ তিন মাসের জন্য স্থগিত চেয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বেশির দেশের পণ্যে এমন শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। যে দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য–ঘাটতি বেশি, সেই দেশের ওপর বেশি হারে শুল্ক আরোপ হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে। বাংলাদেশেও সরকারের উচ্চমহল ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ প্রধান উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টা এ বাড়তি শুল্কের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৃথক দুটি চিঠি দেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ