25.4 C
Dhaka
Monday, July 7, 2025

এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য চরম দুঃসংবাদ, বাতিল হচ্ছে এই প্রথাও!

দীর্ঘদিন ধরে চলা পাবলিক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে ‘সহানুভূতির নম্বর’ দেওয়ার প্রথা থেকে বেরিয়ে আসছে সরকার। এবার থেকে ২৮ নম্বর পেলে ৩৩ করে পাস করিয়ে দেওয়া কিংবা গ্রেড পরিবর্তনের জন্য ২ থেকে ৫ নম্বর পর্যন্ত ‘সহানুভূতির’ নম্বর দেওয়ার অলিখিত নির্দেশনা আর থাকছে না। অপ্রাসঙ্গিক উত্তর লিখলে নম্বর দেওয়ার প্রথাও বাতিল হচ্ছে।

শিক্ষার প্রকৃত মান যাচাই ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে বাস্তবসম্মত করতে এই কড়াকড়ি। ফলে চলতি বছর থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ ৫-এর সংখ্যা কমে যেতে পারে—এমন ইঙ্গিত দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেড় দশক ধরে খাতা মূল্যায়নে উদারনীতির কারণে দেশে পাসের হার ও জিপিএ ৫-এর সংখ্যা বাড়লেও শিক্ষার মান নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন ছিল।

আরও পড়ুনঃ  এসএসসি পরীক্ষার নম্বর বিভাজনে বড় পরিবর্তন!

২০১০ সালে সৃজনশীল পদ্ধতি চালুর পর থেকে খাতা মূল্যায়নে উদার হওয়ার চর্চা ব্যাপকতা পায়। পরীক্ষকদের মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়, খাতায় কিছু লেখা থাকলেই যেন নম্বর দেওয়া হয়। এতে পাসের হার ও জিপিএ ৫-এর উল্লম্ফন ঘটে। শিক্ষার সার্বিক মান নিয়ে দেশ-বিদেশে প্রশ্ন ওঠে। সরকার এতে কর্ণপাত করেনি।

একজন প্রধান পরীক্ষক জানান, অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রাসঙ্গিক ও ভুল উত্তরের জন্যও নম্বর দেওয়া হয়েছে। যেমন, ‘হাজী মুহম্মদ মুহসীনকে কেন দানবীর বলা হয়?’ এই প্রশ্নের উত্তরে একজন শিক্ষার্থী লিখেছিল, ‘তিনি দানব ও বীর ছিলেন, তাই তাকে দানবীর বলা হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, সেই উত্তরের জন্যও পরীক্ষক নম্বর দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনঃ  জোর করে আবু সাঈদের পরিবারকে গণভবনে নেওয়া হয়

শিক্ষাবিদরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দেরিতে হলেও পাসের হার বাড়ানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে এসে সঠিক মূল্যায়নের পথে হাঁটা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এতে শিক্ষার প্রকৃত মানোন্নয়ন ঘটবে। পরীক্ষার ফলে কিছুটা পতন হলেও শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার ফলে সংখ্যাগত অর্জনের চেয়ে গুণগত মানকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এজন্য খাতা মূল্যায়নে শিক্ষকদের ‘সঠিক নম্বর’ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ‘জিপিএ ৫ পেয়ে একজন ছাত্র যখন ভালো মানের একটি কলেজে ভর্তির সুযোগ না পায়, তখন সেই ফলের কোনো মূল্য থাকে না। সেজন্য আমরা এখন মানের দিকে নজর দিচ্ছি। সংখ্যার চেয়ে গুণগত দিকটা গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষাবোর্ডগুলোকে পরীক্ষকদের মানসম্মত মূল্যায়নের নির্দেশনা দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  নূর ভাই আমাদের দলে আসতে চায় : হান্নান মাসউদ

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ‘খাতা মূল্যায়নে উদারনীতি কিংবা কঠোরনীতি—কোনোটাই নয়, আমরা বাস্তবধর্মী ও সঠিক মূল্যায়নের ওপর জোর দিচ্ছি। বেশি পাস কিংবা জিপিএ ৫ দেখানোর লক্ষ্য নয়, বরং ভালো মানের শিক্ষার্থী তুলে আনাই আমাদের লক্ষ্য। সে অনুযায়ী আমরা পরীক্ষকদের নির্দেশনা দিয়েছি।

আপনার মতামত লিখুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ