সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত “সেফ এক্সিট” প্রসঙ্গ ঘিরে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। একটি গণমাধ্যমকে তিনি দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় সরকারের নীতি ও ‘বিপ্লবের স্পিরিট’-এর সঙ্গে বেইমানি করেছেন। এদের মধ্যে একজন উপদেষ্টার নামও তিনি সরাসরি উল্লেখ করেন।
জুলকারনাইন সায়ের বলেন, নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন এবং অনেকে “সেফ এক্সিটের” চিন্তা করছেন। “আমি মনে করি নাহিদ ভুল বলেননি,” মন্তব্য করে সায়ের বলেন, “আমি নিজেও এমন কিছু তথ্য পেয়েছি যা প্রমাণ করে, কিছু উপদেষ্টা প্রকৃত পরিবর্তনের চেতনার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।”
তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, এক উপদেষ্টা পরিবারের সঙ্গে সাবেক ব্যবসায়ী নসরুল আহমেদ বিপুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তার ভাষায়, বিপু পরিবারের মালিকানাধীন ‘হামিদ সোয়েটারস’ নামের একটি কারখানা ২০২১ সালে উপদেষ্টার স্বামী আবু বকর সিদ্দিকী ও তাদের ছেলের নামে হস্তান্তর করা হয়। “৬০০ শ্রমিকের বিশাল এই কারখানার সম্পদমূল্য কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা,” দাবি করেন তিনি।
সায়ের আরও বলেন, “আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, এই হস্তান্তরের কোনো বৈধ নথি বা স্বচ্ছ প্রক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বরং একাধিক সূত্র বলছে, পারিবারিক ঘনিষ্ঠতার সুযোগে বিষয়টি গোপনে সম্পন্ন হয়।”তিনি এটিকে ‘বেইমানি’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রশ্ন তোলেন, “এমন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও কেন এই ব্যক্তিকে উপদেষ্টা পদে আনা হলো?”
জুলকারনাইন আরও অভিযোগ করেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে এখনো এমন কিছু কর্মকর্তা রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা বা অনিয়মের প্রমাণ থাকলেও তারা প্রভাবশালী পদে বহাল আছেন।তিনি বলেন, “এভাবে যদি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হয়, তাহলে জনগণের প্রত্যাশিত পরিবর্তন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।”
রাজনৈতিক মহলে সায়েরের এই মন্তব্য নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, তার এই প্রকাশ সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদের ভেতরে স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। অন্যদিকে, সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা পক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি।

