বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে সভা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরসহ (মাউশি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলির আওতায় নিয়ে আসার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রবিবার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে সভায় উপস্থিত একটি দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা বদলির জন্য আদালতে রিট করেছেন। এ রিট মোকাবেলা করে বদলি চালু করতে গেলে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। এজন্য ইনডেক্সধারী সব শিক্ষকের জন্যই বদলি চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য বদলি নীতিমালা সংশোধন করা হবে। নীতিমালা এনটিআরসিএর সুপারিশের জায়গায় সব ইনডেক্সধারী যুক্ত করা হবে।’
‘স্কুল-কলেজের বদলি নীতিমালার ৩.১৬ ধারা সংশোধন করা হচ্ছে। নতুন নীতিমালায় একই প্রতিষ্ঠান থেকে দুইজন শিক্ষক বদলির আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া আগের নীতিমালায় একজন শিক্ষক কয়টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবে সে বিষয়টি উল্লেখ ছিল না। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একজন শিক্ষক তিনটি প্রতিষ্ঠানে বদলির আবেদন করতে পারবেন।’
এদিকে শিক্ষকদের সফটওয়্যার তৈরি করতে এটুআইকে (এক্সেস টু ইনফরমেশন) চিঠি দিয়েছে মাউশি। চলতি সপ্তাহে এ চিঠির জবাব দেবে সংস্থাটি। এরপর সফটওয়্যার তৈরির কার্যক্রম শুরু হবে।
মাউশির একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হলেও সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল। এ দ্বন্দ্ব নিরসনে নতুন করে সফটওয়্যার তৈরির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সভাও করা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটুআইকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এটুআইকে চিঠি দিয়েছি। সফটওয়্যার তৈরিতে কত টাকা খরচ হবে, এই বিষয়টি তারা এখন জানাবে। যে অর্থ লাগবে সেটি তারাই ম্যানেজ করতে না পারলে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থের ব্যবস্থা করা হবে। চলতি সপ্তাহে এ সংক্রান্ত বিষয় জানানোর কথা রয়েছে। এটুআইএর চিঠি পাওয়ার বিস্তারিত বলা যাবে।’
জানা গেছে, এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নিয়োগ পেলেও দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে থেকে যান, যা শিক্ষকতা পেশার বিকাশে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বদলির সুযোগ চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় এক দফায় কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। দ্বিতীয় দফায় ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা বদলির সুযোগ দাবি করে আদালতে রিট করলে আবারও এ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষকদের অভিযোগ, এ ধরনের দ্বন্দ্ব মূলত প্রশাসনিক অদক্ষতা ও দায়িত্ব পালনের অভাবেরই বহিঃপ্রকাশ। তারা দ্রুত এ কার্যক্রম শুরু করে স্বচ্ছ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে বদলি কার্যক্রম চালুর দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা অনুযায়ী গত ১৫ সেপ্টেম্বরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করার কথা ছিল। তবে নানা জটিলতায় সেই কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।

