Monday, November 10, 2025

‘তোমারে দেহি না আমি? আব্বারে দেহি না আমি? তুমি ইড্ডা কী করলা?’

আরও পড়ুন

একদিকে মায়ের অভিযোগ—ছেলে আর খোঁজ রাখে না, অন্যদিকে ছেলের কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনুতাপ। বিপরীত দুই চিত্র মিলিয়ে মঙ্গলবার দিনভর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া।

টেলিভিশনে প্রচারিত একটি প্রতিবেদনে রিপনের মাকে বলতে শোনা যায়, ‘খুব কষ্ট করে মানুষ করছি, এখন পরিচয়ও দেয় না। আমরা গরিব, পরিচয় দিলে যদি ওর মান-ইজ্জত না থাকে!’

প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা রিপন এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা বাড়িতে থাকেন এবং মা-বাবার খরচ বহন করেন না।

এই প্রতিবেদনের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। অনেকেই রিপনকে ‘অহংকারী’, ‘অবজ্ঞাকারী সন্তান’ আখ্যা দিয়ে মন্তব্য করেন।

তবে পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে মোড় নেয় রাতে, যখন ছড়িয়ে পড়ে আরেকটি ভিডিও।

আরও পড়ুনঃ  অবশেষে পরিবর্তন হলো উত্তরাধিকার সম্পত্তির ভাগাভাগি পদ্ধতি, নতুন নিয়মে সম্পত্তি বণ্টন হবে যেভাবে…

ভিডিওতে দেখা যায়, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন রিপন মিয়া। মাকে জড়িয়ে ধরে বলতে শোনা যায়, ‘তোমারে দেহি না আমি? আব্বারে দেহি না আমি? তুমি ইড্ডা কী করলা? আমার জীবনডা শেষ করলা!’

মাও ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। যাঁরা কিছুক্ষণ আগেও রিপনের কঠোর সমালোচনা করছিলেন, তাঁদের অনেকেই মন্তব্যের সুর পাল্টে ফেলেন। কেউ লিখেছেন, ‘মা-ছেলের সম্পর্ক পবিত্র। এই সম্পর্ক নিয়ে বিচারের আগে ভাবা দরকার।’ আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘সাময়িক ভুল হতেই পারে, কিন্তু অনুতাপ থাকলে মাফ হওয়া উচিত।’

বিষয়টি নিয়ে রিপন মিয়া জানান, ‘এই মুহূর্তে কথা বলার মানসিক অবস্থায় নেই। তবে খুব শিগগিরই সব প্রশ্নের উত্তর দেব। আমি আমার পরিবারকে সব সময় দেখে এসেছি, ভবিষ্যতেও দেখব। কারও কোনো কষ্ট থাকলে তা পূরণ করব। তবে যাঁরা আমার সরল মা–বাবাকে নিয়ে ব্যবসা করেছে, তাদের বিচার একদিন হবেই।’

আরও পড়ুনঃ  পথসভার যে অভিজ্ঞতা কখনো ভুলবেন না ডা. তাসনিম জারা

সোমবার দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্টে রিপন অভিযোগ করেন, ‘কয়েকজন টেলিভিশন সাংবাদিক কোনো রকম অনুমতি ছাড়াই আমার বাড়িতে ঢুকে পড়ে। ঘরে নারী সদস্য থাকার পরও ভিডিও করে। তারা পরিবারকে হেনস্তা করেছে।’

নেত্রকোনার সদর উপজেলার এক কাঠমিস্ত্রির ছেলে রিপন মিয়া প্রথম আলোচনায় আসেন ২০১৬ সালে। তার বানানো একটি ভিডিও—
“বন্ধু তুমি একা হলে আমায় দিয়ো ডাক,/ তোমার সাথে গল্প করব আমি সারা রাত”—

সহজ-সরল আবেগ ও দেশীয় আঞ্চলিকতার ছোঁয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। সাধারণ জীবনের কথাগুলো সুর আর শব্দে ভর করে পৌঁছে যায় লাখো মানুষের হৃদয়ে।

আরও পড়ুনঃ  নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো কার্যকর হলে বাতিল হবে যেসব সুবিধা

তখন থেকেই তিনি কনটেন্ট নির্মাতা হিসেবে পরিচিতি পান। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তাঁর ফলোয়ারসংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। তবে জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে নানান বিতর্কও পিছু নেয়।

রিপন মিয়াকে ঘিরে এই ঘটনার পর এক প্রশ্ন আবার সামনে চলে এসেছে—ভাইরাল সংবাদের আড়ালে সত্যটা কোথায়? মা-ছেলের ব্যক্তিগত সম্পর্কের পরিপূর্ণ ছবি আমরা কি কখনো জানতে পারি? নাকি একাংশ দেখে রায় দিয়ে দিই?

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ