বান্দরবানের লামায় একটি তামাক কোম্পানির দপ্তর থেকে লুট হওয়া ২১ লাখ ১৭ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (১৭ মে) দুপুরে লামা পৌরসভা এলাকার দুটি পৃথকস্থানে মাটি খুঁড়ে এসব টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, লামা শহরের সিলেটিপাড়ার আবদুল করিম ও আরিফের নেতৃত্বে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বিকেলে আবদুল করিমের বাবা ওয়াসীর আলী ও মা আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার তাদের বসতঘরের পাশে মাটি খুঁড়ে ১৭ লাখ টাকা এবং পার্শ্ববর্তী আরেকটি স্থানে মাটি খুঁড়ে আরও এক লাখ টাকা পাওয়া যায়। ডাকাতির পর এসব টাকা মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। এ পর্যন্ত ডাকাতির ঘটনায় লুট হওয়া ২১ লাখ ১৭ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার এবং ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
জানা গেছে, গত ৮ মে রাতে লামা পৌর শহরে আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির দপ্তরে লুটপাট চালায় ১৫-২০ জনের একটি ডাকাত দল। ডাকাতেরা ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা লুট করেছেন বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ডাকাতির ঘটনায় ১০ মে লামা থানায় মামলা দায়েরের পর তদন্তে নেমে পুলিশ বান্দরবানের লামা ও পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারের চকরিয়া এলাকা থেকে এ পর্যন্ত তিন নারীসহ আটজনকে আটক করেছে। আটক হলেন- কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার পূর্ব ভেউলা এলাকার মারুফুল ওরফে আরিফ (৩৩), একই উপজেলার লক্ষ্যাচর এলাকার নাঈমুল ইসলাম ওরফে সাগর (৩১), লামা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার আব্দুর রহিম (৩৬), লামা পৌরসভার মো. সুজন (২৫), লামার বিলছড়ি এলাকার আনোয়ারা বেগম (৪৫), এবং করিমের স্ত্রী ও বোনসহ আরও একজন পুরুষ (নামের পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি)।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন জানান, ১৭ মে করিমের স্ত্রীকে আটক করা হলে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী দুইটি স্থানে অভিযান চালিয়ে মাটি খুঁড়ে ১৮ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এর আগে আব্দুর রহিমের কাছ থেকে ৫০ হাজার ২০০ টাকা এবং তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৬ মে রাত ৭টায় ওয়াসের আলীর পাহাড়ি জমি থেকে আরও ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
লামা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, আটক মো. করিম দক্ষিণ চট্টগ্রামের আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য এবং এই ঘটনার মূল মাস্টারমাইন্ড হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ওসি তোফাজ্জল হোসেন আরও জানান, মামলার পর থেকেই তদন্ত চলমান রয়েছে। আমি এখনো দুর্গম এলাকায় অবস্থান করছি, তাই আটককৃত সকলের নাম এখন বলা সম্ভব নয়। তবে পুরুষ পাঁচজন ও নারী তিনজন- মোট আটজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তার এবং লুট হওয়া সম্পূর্ণ অর্থ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত।