24.7 C
Dhaka
Tuesday, July 8, 2025

তাহলে কি পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকছেন ড. ইউনূস

ড. ইউনূস নিয়ে সার্জিস আলমের মন্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একজন নোবেল বিজয়ী, যিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির বাইরে ছিলেন, বাংলাদেশের সংকটে ছাত্রদের অনুরোধে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এখন, সেই ছাত্রদের একজন মুখপাত্র হঠাৎ করে ড. ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন অনেকেই।

এই ঘোষণার মাধ্যমে তরুণ সমাজের একটি বড় অংশ নতুন আশা দেখছে। তাদের কাছে ড. ইউনূস হচ্ছেন একজন দুর্নীতিমুক্ত, আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য এবং বাংলাদেশের রাজনীতির সিস্টেমের বাইরে থাকা ক্লিন নেতা। সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, ছাত্রদের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অনেক মানুষও তার নেতৃত্বে আশাবাদী। বিশেষ করে যারা দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের দ্বন্দ্বে ক্লান্ত, তাদের কাছে ড. ইউনূস একটি নতুন উপায় হিসেবে ধরা দিচ্ছেন।

আরও পড়ুনঃ  সেনাবাহিনী সবসময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে: সেনাপ্রধান

বিএনপি, যেটি এতদিন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে এসেছে, এখন ড. ইউনূসের আবির্ভাবের পর তাদের রাজনৈতিক কৌশলে কিছুটা টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। তারা সংস্কার কাজের জন্য সহায়তার পাশাপাশি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। অন্যদিকে, ড. ইউনূসকে নিয়ে ছাত্ররা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন একটি ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

বিএনপির নেতারা বলছেন, তাদের ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার কথা বলা হয়েছে। তাদের মতে, ড. ইউনূস যদি ছাত্রদের আহ্বানে রাজনীতিতে সক্রিয় হন, তবে তার নেতৃত্বে একটি শিক্ষিত তরুণ এবং নাগরিক সমাজভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে দুর্নীতিমুক্ত ও দক্ষ প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি থাকবে।

আরও পড়ুনঃ  বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন-বোনাস নিয়ে সবশেষ যা জানালেন মাউশি ডিজি

প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৬ সালের জুনে নির্বাচন হতে পারে। তবে, যদি ডিসেম্বরেই নির্বাচন হয়, তবে নতুন রাজনৈতিক শক্তি সংগঠিত হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় থাকবে না, যা পুরনো রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সুবিধাজনক। বিএনপি এই কারণে দ্রুত নির্বাচন চায় যাতে তৃতীয় পক্ষ শক্তিশালী হয়ে উঠতে না পারে।

ড. ইউনূস রাজনীতিতে সক্রিয় হলে, দেশের রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। তিনি সরকার ও বিরোধী পক্ষের জন্য চাপ তৈরি করবেন, কারণ তার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং জনগণের মধ্যে নির্ভরযোগ্যতা রয়েছে। তরুণ ভোটার, প্রথমবারের ভোটার, এবং যারা রাজনীতিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে—এই তিন শ্রেণীর ভোটার তার শক্তির উৎস হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  জানা গেল ঈদের সম্ভাব্য তারিখ

সবশেষে, এই সম্ভাব্য রাজনীতি ও নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে জনগণ। যদি ড. ইউনূস বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারেন এবং জনগণের হৃদয় জয় করতে সক্ষম হন, তাহলে তিনি শুধুমাত্র একটি বিকল্প নেতা হবেন না, বরং বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা ঘটাতে পারবেন। তবে তার পথ সহজ হবে না, কারণ সামনে রয়েছে পুরনো কাঠামো, সংঘাতময় রাজনীতি এবং আস্থার সংকট—যেগুলো তাকে অতিক্রম করেই সামনে এগোতে হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ