25.7 C
Dhaka
Tuesday, July 8, 2025

সালিস বৈঠকের কথা বলে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে জামায়াতের ২ কর্মীকে হত্যা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে গণপিটুনিতে নিহত দুজনের পরিচয় মিলেছে। তারা হলেন- উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মাহমুদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ ছালেক (৩৫)। সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গণপিটুনিতে দুজন নিহত হন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন জামায়াতে ইসলামীর সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোসেন।

তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তিরা জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। একটি সালিস বৈঠকের কথা বলে তাদের এওচিয়া এলাকায় ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দুজনের মাথায় পর্যায়ক্রমে আঘাত করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  আলটিমেটামেও কাজে যোগ দেননি কিছু পুলিশ কর্মকর্তা

স্থানীয়রা জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নেজাম উদ্দিন এলাকায় আসতেন না। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি এলাকায় ফেরেন। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ৪ থেকে ৫টি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নেজামসহ একদল যুবক ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় যান। সেখানে তাদের দেখে মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণা শুনে এলাকাবাসী তাদের আটকের উদ্দেশ্যে জড়ো হন। যদিও এলাকাবাসীর দাবি তাদের দিকে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে একপর্যায়ে গণপিটুনিতে নেজাম ও ছালেক নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন স্থানীয় তিন বাসিন্দা ও এক দোকানি। আহত ব্যক্তিরা হলেন ওবায়দুল হক (২২), নাসির উদ্দিন (৩৮), আব্বাস উদ্দিন (৩৮) ও মো. মামুনুর রশিদ (৪৫।

আরও পড়ুনঃ  চাকরি হারালেন একাত্তর টিভির শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপা

যদিও জামায়াতের স্থানীয় নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন, এলাকায়বিরোধ মীমাংসার জন্য একটি সালিস বৈঠকের কথা বলে নেজাম ও তার সঙ্গীদের এওচিয়ায় ডেকে নিয়ে মাইকে ডাকাত পড়েছে ঘোষণা করে হামলা করা হয়। এরপর নেজাম উদ্দিন ও ছালেককে হত্যা করা হয়।

এদিকে জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন শাখার সেক্রেটারি নিহত দুজনকে জামায়াতের সক্রিয় কর্মী দাবি করলেও উপজেলা আমির মাওলানা কামাল উদ্দিন বলেন, নিহত ব্যক্তিরা জামায়াতের তালিকাভুক্ত কোনো কর্মী নন। তবে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় যেহেতু জামায়াতের জনসমর্থন বেশি রয়েছে, সে হিসেবে হয়তো তারাও জামায়াতকে ভালোবাসতেন। এ ঘটনা কি পরিকল্পিত নাকি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটেছে, তা প্রশাসন খুঁজে বের করুক।

আরও পড়ুনঃ  ফারাক্কার ভাটিতে বাঁধ দিচ্ছে বাংলাদেশ, ভারতকে চোখরাঙানি!

এ বিষয়ে সাতকানিয়া থানার ওসি মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা ও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, নিহত যুবকেরা রাতে কেন ওই এলাকায় গিয়েছিলেন এবং তাদের গণপিটুনি দিয়ে কেন হত্যা করা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। তবে পুরো বিষয়টি জানার জন্য তদন্ত চলছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ