মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৭৩২ জন। মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং এই তথ্য জানিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসির বার্মিজ সংবাদদাতারা বলেছেন, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মিন অং হ্লাইং জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে নেপিদোতে ৯৬ জন, সাইগাইংয়ে ১৮ জন এবং মান্দালয়ে ৩০ জন রয়েছেন। আহতদের মধ্যে নেপিদোতে ১৩২ জন এবং ৩০০ জন সাগাইংয়ে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকা থেকে এখনো আহতদের উদ্ধার করা হচ্ছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় শহর মান্দালয়ের কাছে ৭ দশমিক ৭ তীব্রতার ভূমিকম্প আঘাত হানে। প্রায় ১১ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প–পরবর্তী কম্পন অনুভূত হয়। প্রতিবেশী বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, চীন ও ভিয়েতনামেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
অন্যদিকে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে নির্মাণাধীন ৩০ তলা একটি ভবন ধসে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এখনও ওই ভবনে ৪৩ জন শ্রমিক আটকা পড়ে আছেন।
ইউএসজিএস আরও জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মাটির প্রায় ছয় মাইল গভীরে। কম গভীরতায় হওয়ায় কম্পন ভয়াবহভাবে অনুভূত হয়েছে। এরই মধ্যে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অসংখ্য আহত মানুষ।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রয়াত্ত সংবাদমাধ্যম দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ব্রিটিশ আমলে তৈরি সাগাইং সেতু ভেঙে গেছে। এটি মিয়ানমারের মান্দালয় ও সাগাইং অঞ্চলে ইরাবতী নদীর ওপর নির্মিত হয়েছিল।
ভূমিকম্প আঘাত হানার পর মান্দালয় এবং রাজধানী নেপিদোসহ দেশটির মধ্যঞ্চলের কয়েকটি অংশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে জান্তা সরকার। এ ছাড়া সাগাইং, মান্দালয়, বাগো এবং ম্যাগওয়ে অঞ্চলের পাশাপাশি পূর্ব শান রাজ্যেও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, মিয়ানমারে ভূমিকম্পের তীব্রতায় রাস্তাঘাট ফাটল দেখা গেছে এবং ভবনের টুকরো খসে পড়েছে।
এ দিকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পায়োংতার্ন সিনাওয়াত্রা ‘তাৎক্ষণিকভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ব্যাংকককে জরুরি অঞ্চল ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং দেশব্যাপী প্রদেশগুলোকে পরিস্থিতিকে জাতীয় জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে জনগণকে সহায়তা দেওয়া সম্ভব হয়।’