25.4 C
Dhaka
Monday, July 7, 2025

নতুন শিক্ষাক্রম বাদ দিয়ে অতিশীঘ্র পুরোনো সিলেবাসে ফেরত যাওয়া হোক

গত সরকার এই রাষ্ট্রের কতটা ক্ষতি করে গেছে তার একটা বড় উদাহরণ নিয়ে একটু আলোকপাত করতে চাই। এই জন্য করতে চাই এইসবের পুনরাবৃত্তি আর যেন না ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পুত্রকে আইসিটি বিশেষজ্ঞ হিসাখ্যা দেওয়া। অথচ এই বিষয়ে তার কোন পিএইচডি ডিগ্রী নাই, গবেষণা নাই। শুধু এখানেই থেমে নেই। পুরো ১৫/১৬ বছর ধরে তার বিরুদ্ধে একটা সমালোচনা দেখিনি যা ভয়ংকর একটা ব্যাপার।

এমনকি আমাকে আমার শুভাকাঙ্খীরা বারবার সাবধান করেছে আমি যেন দুনিয়ার সব বিষয় নিয়ে লিখি কেবল তথাকথিত আইসিটি বিশেষজ্ঞ ছাড়া। যদিও আমি নতুন কারিকুলামের সমালোচনা করতে গিয়ে তার সমালোচনা করে লিখেছি কিন্তু সেগুলো ছিল সফট সমালোচনা।

এই একটা ব্যক্তিকে খুশি করতে গিয়ে মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রতিটি শ্রেণীতে আইসিটি সাবজেক্ট কারিকুলামে ঢুকিয়েছে। দুনিয়ার কোন দেশে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাসে এই বিষয় ঢুকিয়েছে? একটা দেশের নাম বলুনতো? তোষামোদিরতো একটা মাত্রা আছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে হলেও তাকে খুশি করে যেতে হবে। তাকে খুশি করা মানে তার মাকে খুশি করা।

আরও পড়ুনঃ  শহীদ মিনার থেকে ফিরে যে বার্তা দিলেন সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ

নতুন শিক্ষাক্রমের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো বিভাগ উঠিয়ে দেওয়া। হ্যাঁ, বিভাগ উঠিয়ে দিয়ে তার চেয়ে ভালো কোন একটা দ্বারা প্রতিস্থাপিত করলে আপত্তি থাকতো না বরং খুশি হতাম। বিভাগ থাকা মানে বিষয় নির্বাচনে এক ধরণের স্বাধীনতা থাকা। বিভাগ উঠিয়ে দিয়ে বিষয় নির্বাচনে যেইটুকু স্বাধীনতা আগে ছিল সেটাও কেড়ে নিলো।

বিভাগ উঠিয়ে যদি বলতো এখন থেকে শুধু বাংলা, ইংরেজি, সামাজিক বিজ্ঞান ও ইতিহাস ব্যতীত অন্যসব বিষয় ঐচ্ছিক তাহলে সেটা হতো সর্বোত্তম পদ্ধতি। ইংরেজি মাধ্যমে সেটাই করা হয়। বিভাগ উঠিয়ে সবার জন্য ১০টি বিষয় বাধ্যতামূলক করা খুবই অন্যায় হয়েছে। এইটা করতে গিয়ে বিজ্ঞানকে কাটাছেঁড়া করতে হয়েছে। এটা করতে গিয়ে উচ্চতর গণিতকে একদম বাদ দিতে হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  কাল আবু সাঈদের বাড়িতে যাচ্ছেন ড. ইউনূস

সবার জন্য করতে গিয়ে বিষয়গুলোকে একটু তরলীকরণ বা সহজীকরণ করতে হয়েছে। অথচ লেখাপড়া বিশেষ করে অষ্টম শ্রেণী থেকে লেখাপড়া হতে হয় চ্যালেঞ্জিং। কঠিনেরে করিলে জয় মানুষ খুশি হয়। এই জয়ের আনন্দ ছোটবেলা থেকে না পেলে বা ছেলেমেয়েদের জয়ের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করলে আমরা কিভাবে মেধাবী প্রজন্ম পাবো?

শুধু আইসিটিই ঢুকানো হয়নি। সাথে এমন এমন বিষয় ঢুকানো হয়েছে যার মাধ্যমে মূল ধারার শিক্ষাকে কারিগরি ধারার শিক্ষা বানিয়ে ফেলা হয়েছে। বিজ্ঞানের আগে কিভাবে তথ্য প্রযুক্তি বেশি গুরুত্ব পায় আমি সেটা বুঝি না। বিজ্ঞান হলো প্রযুক্তি জ্বালানি। এটাই হলো তোষামোদির সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর ছিল। আমি আশা করি নতুন শিক্ষাক্রম অতিশীঘ্র বাদ দিয়ে আমাদেরকে পুরনো সিলেবাসে ফেরত যাওয়া।

আরও পড়ুনঃ  প্রক্টরসহ ঢাবির সম্পূর্ণ প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ

আর ক্ষতিকে আরো ক্ষতিকর করার জন্য পলক নামক একজনকে আইসিটি মন্ত্রী বানিয়েছে। তার যোগ্যতা? তার বন্ধু। রাষ্ট্রকে নিয়ে কি পরিমান ছেলেখেলাই খেলেছে।

লেখক: অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

আপনার মতামত লিখুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ