24.7 C
Dhaka
Tuesday, July 8, 2025

নতুন ‘রাজনৈতিক দল’ গঠন করছে শিক্ষার্থীরা, এক মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত

কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা নতুন দল গঠনের চিন্তাভাবনা করছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্যই করেছেন ছাত্র আন্দোলনের চার শিক্ষার্থী।

ছাত্র আন্দোলনের এসব শিক্ষার্থী আশা করছেন, গত ১৫ বছর যা হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়। এই ১৫ বছরে ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে শক্ত হাতে দমন-পীড়ন করেছেন শেখ হাসিনা। গত জুন পর্যন্ত এভাবেই চলে।

তবে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে জুনেই রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনে শুরু হয় দমন-পীড়ন। পরে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়, ক্ষমতাচ্যুত হয় শেখ হাসিনা সরকার।

রয়টার্স জানায়, এর আগে সহিংসতায় বাংলাদেশে অন্তত ৩০০ মানুষ মারা যায়। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা এটি।

কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকেই শুরু হয় সরকারবিরোধী আন্দোলন। মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতি থেকে শুরু করে সব অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে ‘জেন জি’ হিসেবে পরিচিত তরুণেরা।

আরও পড়ুনঃ  বিসিবি সভাপতির পদ হারালেন ফারুক আহমেদ

শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়, ক্ষমতায় আসে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টা হন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্র আন্দোলনের দুজন সমন্বয়কও রয়েছেন।

গত তিন দশকের বেশির ভাগ সময় ক্ষমতায় ছিল হয় আওয়ামী লীগ, নয়তো বিএনপি। এই দুই দলের সর্বোচ্চ নেতা শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার বয়স এখন সত্তরের বেশি।

এমন অবস্থায় দেশে সংস্কার আনতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে আলোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা। রয়টার্সকে এমনটাই বলেন মাহফুজ আলম নামের এক শিক্ষার্থী। সরকার এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রণি-পেশার মানুষের মধ্যে লিয়াজোঁ করতে গঠিত কমিটির প্রধানের দায়িত্বে আছেন তিনি।

আইন নিয়ে পড়াশোনা করা ২৬ বছর বয়সী মাহফুজ আলম বলেন, এক মাসের মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের আগে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ করতে চায় শিক্ষার্থীরা। এর আগে পরিকল্পনার ব্যাপারে কোথাও বিস্তারিত জানানো হয়নি।

আরও পড়ুনঃ  বন্যাকে পরিকল্পিত দুর্যোগ বললেন উপদেষ্টা আসিফ

এ ব্যাপারে মাহফুজ আলম বলেন, ‘দুই রাজনৈতিক দলের ওপর মানুষ আসলেই ক্লান্ত-বিরক্ত। আমাদের ওপর তাদের আস্থা রয়েছে।’

এ নিয়ে সমন্বয়ক তাহমিদ চৌধুরী বলেন, তাদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এর মূল ভিত্তি হবে অসাম্প্রদায়িকতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা।

তবে, অর্ন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দুজন ছাত্র প্রতিনিধি এ ব্যাপারে খোলাশা করে কিছু বলেননি। এমনকি কোন পলিসি নিয়ে তারা কাজ করতে চাইছেন, সেটাও জানাননি। তবে, নির্বাচন কমিশনে ব্যাপক সংস্কারের কথা বলছেন।

এ নিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এই আন্দোলনের স্পিরিট ছিল মূলত নতুন বাংলাদেশ গঠন করা, যেখানে কোনো ফ্যাসিস্ট বা স্বৈরাচার আর থাকবে না। তা নিশ্চিত করতে গঠনগত সংস্কার দরকার। এতে কিছু সময় তো লাগবেই।’

আরও পড়ুনঃ  হঠাৎ সেন্টমার্টিনে ভয়াবহ আগুন, পুড়ে ছাই একের পর এক রিসোর্ট

দ্রুত নির্বাচন দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে যে দাবি জানানো হচ্ছে, তা অন্তর্বর্তী সরকার আমলে নিচ্ছে না বলে রয়টার্সকে বলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

এরই মধ্যে প্রধান বিচারপতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, ও পুলিশ প্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়ারা।

ছাত্ররা নতুন দল গঠন করেছেন কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, তাদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়নি। তবে, রাজনৈতিক ধারা পরিবর্তন হবে। কেননা এতদিন এই রাজনীতি থেকে তরুণদের বাদ রাখা হতো। সূত্র: বিডি জার্নাল

আপনার মতামত লিখুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ