25.3 C
Dhaka
Tuesday, July 8, 2025

এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবে সেনাবাহিনী, যা বলছে বোর্ড

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা আগামী ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হবে। এবারের পরীক্ষা কেন্দ্রে সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে খবর ছড়িয়েছে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড সাব কমিটি। ফলে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার এহসানুল কবির দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব পালন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কোথা থেকে কীভাবে এ খবর ছড়িয়েছে বিষয়টি আমার জানা নেই।’

অধ্যাপক খন্দকার এহসানুল কবির আরও বলেন, ‘বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। সে হিসেবে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নের নিরাপত্তা কিংবা কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব তারা পালন করতে পারেন। তবে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

এদিকে ২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), দাখিল, এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর ও সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য পরিপত্র জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিপত্রে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য নতুন একগুচ্ছ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও গুজব রোধে নজরদারি জোরদার ও উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  নাহিদ বলছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আ ন্দোলন বি লু প্ত, উমামা বলছেন ‘হয়নি’

পরিপত্রে বলা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে সব পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিটের পর পরীক্ষাকেন্দ্রে এলে রেজিস্টারে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে। বিলম্বে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রতিদিন কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে অবহিত করবে। তবে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পর কোনো পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ বা পরীক্ষা গ্রহণে অনুমতি প্রদান করা যাবে না।

কেন্দ্রসচিব ব্যতীত পরীক্ষাকেন্দ্রে অন্য কেউ মুঠোফোন ও মুঠোফোনের সুবিধাযুক্ত ঘড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত হতে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরা কোনো মুঠোফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং প্রশ্নপত্র বহনের কাজে কালো কাঁচযুক্ত মাইক্রোবাস বা এরূপ কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।

আরও পড়ুনঃ  শেখ হাসিনার সাথে ফোনে কথা বলা সেই নেতা গ্রেপ্তার

প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) নিয়োগ দিতে হবে। ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত হতে কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব বা তাঁর মনোনীত উপযুক্ত প্রতিনিধি ট্যাগ অফিসারসহ প্রশ্নপত্র গ্রহণ করে পুলিশ প্রহরায় কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/কর্মকর্তার (ট্যাগ অফিসার) উপস্থিতি ব্যতীত প্রশ্নপত্র ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত থেকে বের করা যাবে না বা বহন করা যাবে না।

ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে বহুমুখী নির্বাচনী প্রশ্নসহ রচনামূলক/সৃজনশীলের সব সেট প্রশ্নই নিতে হবে। প্রশ্নের সেট কোড পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সেট কোডে পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার), কেন্দ্রসচিব এবং পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে নির্ধারিত সেট কোড নিশ্চিত হয়ে বিধি অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।

পরীক্ষা চলাকালীন এবং পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আগে বা পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা–সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ ব্যতীত অন্যদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অনিবার্য কারণবশত কোনো পরীক্ষা বিলম্বে শুরু করতে হলে যত মিনিট পর পরীক্ষা শুরু হবে, পরীক্ষার্থীদের সে সময় থেকে যথারীতি প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত নির্ধারিত সময় দিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  ড. ইউনূসকে সমর্থন জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি

পরীক্ষাকেন্দ্রে ও প্রশ্ন পরিবহনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে।

প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসনকে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসসংক্রান্ত গুজব কিংবা এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নজরদারি জোরদার করবে।

পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে সব ফটোকপি মেশিন পরীক্ষা চলাকালীন বন্ধ থাকবে।

পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগামী ১০ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব উত্তরপত্র নিকটস্থ ডাক বিভাগে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বোর্ডগুলো পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোকে নির্দেশনা প্রদান করবে।

পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।

পরীক্ষাসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত গণমাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমে উপস্থাপনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে সভাপতি, আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা দায়িত্ব পালন করবেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ